নিজস্ব প্রতিবেদক, নোয়াখালী | ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় চরের জমি দখলকে কেন্দ্র করে দুই সন্ত্রাসী বাহিনীর মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ ও বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। এতে এখন পর্যন্ত ৫ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। পুলিশের ধারণা, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলার সুখচর ইউনিয়নের দুর্গম ‘জাগল্লার চরে’ এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

নিহতদের মধ্যে আলাউদ্দিন (৪০) নামে একজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি সুখচর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চর আমান উল্যাহ গ্রামের মহিউদ্দিনের ছেলে। তিনি এলাকায় ‘আলাউদ্দিন বাহিনী’র প্রধান হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বাকি ৪ জনের মরদেহ ঘটনাস্থলে পড়ে থাকতে দেখা গেছে, যাদের পরিচয় এখনো শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জাগল্লার চরের সরকারি খাস জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জাহাজমারা ইউনিয়নের ‘কোপা সামছু বাহিনী’ এবং সুখচর ইউনিয়নের ‘আলাউদ্দিন বাহিনী’র মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কোপা সামছু বাহিনী চরের বিশাল এলাকা নিজেদের দখলে নিয়ে জমি বিক্রি শুরু করে। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে আলাউদ্দিন বাহিনীও জমি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে এবং চরের নিয়ন্ত্রণ নিতে স্থানীয় ডাকাত দলের সাথে আঁতাত করে।

মঙ্গলবার সকালে দুই গ্রুপ চরের দখল নিতে মুখোমুখি অবস্থানে চলে আসে। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বন্দুকযুদ্ধে লিপ্ত হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আলাউদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হন। আলাউদ্দিনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদিকে, ঘটনাস্থলেই আরও ৪ জনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম জানান, খবর পাওয়ার পর দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সক্ষম হয়। সেখান থেকে ৫টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুরো এলাকায় বর্তমানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

ওসি আরও জানান, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহগুলো মর্গে পাঠানো হচ্ছে। চরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের প্রক্রিয়া চলছে এবং সংঘর্ষে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts