চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই তাইওয়ানের জন্য ১১.১ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ১ লাখ ৩২ হাজার কোটি টাকা) মূল্যের একটি বিশাল অস্ত্র বিক্রয় প্যাকেজ অনুমোদন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে। এটি এখন পর্যন্ত তাইওয়ানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া একক বৃহত্তম সামরিক সহায়তা প্যাকেজ।
মার্কিন প্রশাসনের এই পদক্ষেপে অত্যাধুনিক ড্রোন, রকেট সিস্টেম এবং ক্ষেপণাস্ত্রসহ মোট আটটি ভিন্ন ক্যাটাগরির সামরিক সরঞ্জাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই প্যাকেজের প্রধান সরঞ্জামগুলো হলো:
- হিমার্স ও মিসাইল সিস্টেম (৪.০৫ বিলিয়ন ডলার): এর মধ্যে রয়েছে এম১৪২ হিমার্স (HIMARS) রকেট লঞ্চার এবং ৪২০টি ‘অ্যাটাকমস’ (ATACMS) ট্যাকটিক্যাল ব্যালিস্টিক মিসাইল। ইউক্রেন যুদ্ধে এই সিস্টেমটি অত্যন্ত কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।
- হাউইটজার কামান (৪.০৩ বিলিয়ন ডলার): অত্যাধুনিক এম১০৯এ৭ (M109A7) সেলফ-প্রপেল্ড হাউইটজার সিস্টেম।
- লয়টারিং মিউনিশন বা ড্রোন (১.১ বিলিয়ন ডলার): আল্টিয়াস (ALTIUS) লয়টারিং মিউনিশন, যা মূলত ‘কামিকাজে ড্রোন’ হিসেবে পরিচিত।
- ট্যাকটিক্যাল নেটওয়ার্ক ও সফটওয়্যার (১.০১ বিলিয়ন ডলার): সামরিক বাহিনীর মধ্যে কার্যকর যোগাযোগ রক্ষার জন্য ট্যাকটিক্যাল মিশন নেটওয়ার্ক সিস্টেম এবং প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার।
- ট্যাংক বিধ্বংসী মিসাইল: ৩৭৫ মিলিয়ন ডলার মূল্যের ‘জাভলিন’ (Javelin) মিসাইল এবং ৩৫৩ মিলিয়ন ডলারের ‘টিওডব্লিউ ২বি’ (TOW 2B) অ্যান্টি-ট্যাংক মিসাইল সিস্টেম।
- হেলিকপ্টার ও জাহাজ বিধ্বংসী ব্যবস্থা: এএইচ-১ডব্লিউ (AH-1W) অ্যাটাক হেলিকপ্টারের খুচরা যন্ত্রাংশের জন্য ৯৬ মিলিয়ন ডলার এবং হারপুন অ্যান্টি-শিপ মিসাইল মেরামতের জন্য ৯১.৪ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এই ঘোষণার পর এখন এটি ৩০ দিনের জন্য কংগ্রেসের পর্যালোচনার অধীনে থাকবে। তবে দুই দেশের বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কংগ্রেসে এটি বড় কোনো বাধা ছাড়াই অনুমোদিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তাইওয়ান এই পদক্ষেপকে তাদের আত্মরক্ষা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে এক বড় মাইলফলক হিসেবে দেখছে। অন্যদিকে, বেইজিং এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে।



