হাছনাইন বিন আলমগীর,স্পেশাল করেসপনডেন্ট।
ভোলার পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নে সরকারের নীরবতার বিরুদ্ধে আজ ভোলাজুড়ে অভূতপূর্ব গণআন্দোলন গড়ে উঠেছে। আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ইলিশা ফেরিঘাট, যেখানে ছাত্র-জনতা ইন্ট্রাকোর গ্যাসবাহী গাড়ি আটক করছে। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে আন্দোলন আরও তীব্র ও দৃশ্যমান রূপ পেয়েছে।
ভোলা সদর ছাড়াও বোরহানউদ্দিন, তজুমউদ্দিন, লালমোহন ও চরফ্যাশন উপজেলায় সকাল থেকে হাজারো শিক্ষার্থী রাস্তায় নেমে আসে। আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে প্রতিটি প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠান ও কলেজে। বহু জায়গায় শিক্ষক-অভিভাবকরাও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন।
রাস্তায় অবস্থান, মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল—সব মিলিয়ে ভোলার জেলা শহর থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত আন্দোলনের আগুন ছড়িয়ে পড়ে। কোথাও কোথাও বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় দাঁড়ানোয় রাস্তা সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়, আবার প্রশাসনের অনুরোধে বা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে পুনরায় খুলে দেওয়া হয়।
এদিকে ভোলা শহর শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি তিন দিন আগে পাঁচ দফা দাবিতে সরকারের কাছে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছিলেন। নির্ধারিত সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ না আসায় আজ আন্দোলন আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তার নেতৃত্বেই ইন্ট্রাকোর গ্যাসবাহী যানবাহনগুলো আটকে রাখা হয় এবং পরে ভোলা সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মঠে নিয়ে যাওয়া হয়।
আন্দোলনকারীরা ভোলার দাবি বাস্তবায়নের জন্য রাস্তাজুড়ে উচ্চকণ্ঠে স্লোগান দেন—
“রক্ত লাগলে রক্ত নে, ভোলা-বরিশাল সেতু দে।”
“গ্যাস লাগলে গ্যাস নে, ভোলা-বরিশাল সেতু দে।”
“ভোলার দাবি মানতে হবে, এখনই সেতু দিতে হবে।”
“শিক্ষার সুযোগ চাই—ভোলায় বিশ্ববিদ্যালয় চাই।”
“গ্যাস আছে ভোলায়, সংযোগ কেন ঘরে ঘরে নাই?”
স্লোগান ও মিছিলের শব্দে আজ ভোলার প্রতিটি মোড় যেন উত্তাল হয়ে ওঠে।
গত কয়েক মাস ধরেই ভোলা-বরিশাল সেতুসহ মেডিকেল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, শিল্পকারখানা ও গ্যাস সংযোগের দাবিতে ভোলাবাসী আন্দোলন চালিয়ে আসছে। কখনো মানববন্ধন, কখনো স্মারকলিপি, আবার কখনো ঢাকায় শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন—সব জায়গায় ভোলার মানুষ একই দাবিতে ঐক্যবদ্ধ ছিল।
আজকের এই সর্বস্তরের উপস্থিতিতে আন্দোলন নতুন গতি পেয়েছে।
“দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে”
আন্দোলনকারীদের ভাষায়—
“ভোলার উন্নয়ন আর বিলম্ব সইবে না। সেতু, মেডিকেল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়—সব দাবি বাস্তবসম্মত। সরকার যতদিন নিরব থাকবে, ততদিন আমাদের আন্দোলন আরও বেগবান হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।”
এদিকে জেলা জুড়ে উত্তেজনা থাকলেও এখনও পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ রয়েছে।



