নিজস্ব প্রতিবেদক | আন্তর্জাতিক ডেস্ক

পূর্ব ভূমধ্যসাগরে নিজেদের কৌশলগত স্বার্থ রক্ষা এবং জ্বালানি অবকাঠামোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একজোট হচ্ছে ইসরায়েল, গ্রিস ও দক্ষিণ সাইপ্রাস। তুরস্কের ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক প্রভাব ও সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশ তিনটি একটি বিশেষ ‘যৌথ দ্রুত প্রতিক্রিয়া বাহিনী’ (Joint Rapid Reaction Force) গঠনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

প্রস্তাবিত বাহিনীর কাঠামো

প্রতিরক্ষা বিষয়ক একাধিক আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, এই বিশেষ বাহিনীতে মোট ২,৫০০ জন প্রশিক্ষিত সেনাসদস্য মোতায়েন করা হবে। শক্তির ভারসাম্য বজায় রাখতে বাহিনীটির জনবল বিন্যাস করা হয়েছে নিম্নোক্তভাবে:

  • ইসরায়েল: ১,০০০ জন সেনা।
  • গ্রিস: ১,০০০ জন সেনা।
  • দক্ষিণ সাইপ্রাস: ৫০০ জন সেনা।

কৌশলগত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য সমুদ্রতলের বিশাল জ্বালানি পাইপলাইন ও গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক খনিজ সম্পদ পাহারা দেওয়া। বিশেষ করে ভূমধ্যসাগরের তলদেশ দিয়ে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহের যে পরিকল্পনা রয়েছে, সেটির নিরবচ্ছিন্ন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায় এই ত্রিপক্ষীয় জোট।

আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতি ও তুরস্কের অবস্থান

দীর্ঘদিন ধরেই পূর্ব ভূমধ্যসাগরের জলসীমা এবং খনিজ সম্পদের মালিকানা নিয়ে তুরস্কের সঙ্গে গ্রিস ও সাইপ্রাসের বিরোধ চলছে। তুরস্ক এই অঞ্চলে নিজেদের ‘ব্লু হোমল্যান্ড’ (Mavi Vatan) নীতির আওতায় সার্বভৌমত্ব দাবি করে আসছে। এমতাবস্থায় ইসরায়েলের সরাসরি সম্পৃক্ততায় এই সামরিক জোট গঠন আঙ্কারার জন্য একটি শক্তিশালী বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

নিরাপত্তা ঝুঁকি ও ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণ

এই সামরিক বলয় তৈরির পদক্ষেপটি এই অঞ্চলে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ন্যাটোর সদস্য দেশ গ্রিস ও তুরস্কের মধ্যবর্তী বিদ্যমান স্নায়ুযুদ্ধে ইসরায়েলের এই সরাসরি অংশগ্রহণ ভূ-মধ্যসাগরের সামগ্রিক নিরাপত্তায় নতুন মাত্রা যোগ করবে।

তুরস্কের পক্ষ থেকে এই জোট গঠনের বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি না এলেও আঙ্কারা ইতিপূর্বে একাধিকবার স্পষ্ট করেছে যে, তাদের পাশ কাটিয়ে এই অঞ্চলে কোনো জ্বালানি প্রকল্প বা সামরিক অবকাঠামো সফল হতে দেওয়া হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts