আমেরিকার উটাহ অঙ্গরাজ্যে রক্ষণশীল কর্মী চার্লি কার্কের হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া তরুণ টাইলার রবিনসন (২২)-এর বিরুদ্ধে প্রসিকিউটররা মৃত্যুদণ্ডের দাবি করার ঘোষণা দিয়েছেন। মঙ্গলবার আদালতে দাখিল করা নথিতে জানানো হয়, রবিনসন নিজেই পাঠানো টেক্সট মেসেজে হত্যার দায় স্বীকার করেছিলেন।

আদালতের নথি অনুসারে, গত বুধবার ইউটা ভ্যালি ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে ছাদের ওপর থেকে রাইফেলের একটি গুলি ছুড়ে কার্ককে হত্যা করেন রবিনসন। সেই গুলি কার্কের গলায় বিদ্ধ হয়। হত্যার পর তিনি তার রুমমেট ও রোমান্টিক পার্টনারকে মেসেজে লিখেছিলেন, “আমি তার ঘৃণা আর সহ্য করতে পারিনি।”

ইউটা কাউন্টির জেলা অ্যাটর্নি জেফ্রি গ্রে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “ঘটনার প্রকৃতি ও প্রমাণের ভিত্তিতে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমরা মৃত্যুদণ্ডের আবেদন করব।”

মঙ্গলবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আদালতে হাজির হন রবিনসন। তাকে ‘সুইসাইড প্রিভেনশন স্মক’ নামের বিশেষ পোশাক পরতে দেখা যায়। বিচারক তাকে কোনো জামিন ছাড়াই কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

হত্যার আগে পরিকল্পনা ও স্বীকারোক্তি

প্রসিকিউটররা আদালতে জানান, হত্যার এক সপ্তাহ আগে থেকেই রবিনসন পরিকল্পনা করছিলেন। তার পাঠানো মেসেজে উল্লেখ ছিল—কার্ককে হত্যার সুযোগ পেয়েছেন এবং তিনি তা করবেন। পরবর্তী বার্তায় তিনি রুমমেটকে লেখেন, “আমি করেছি, দুঃখিত।”

ঘটনার পর রবিনসন রাইফেলটি একটি ঝোপে ফেলে আসেন। পরে টেক্সটে আফসোস করে লেখেন, “দাদুর রাইফেলটা ফেলে আসা উচিত হয়নি।” পুলিশ জানায়, অস্ত্রের ট্রিগারে পাওয়া ডিএনএ তার সঙ্গেই মিলে গেছে।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও বিভাজন

৩১ বছর বয়সী চার্লি কার্ক ছিলেন কট্টর রক্ষণশীল সংগঠন টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩,০০০ দর্শকের সামনে বক্তৃতার সময় তিনি খুন হন।

ঘটনার ভিডিও অনলাইনে ভাইরাল হলে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। তবে এর পাশাপাশি রাজনৈতিক দোষারোপ ও বিভাজনও বাড়তে থাকে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সরাসরি অভিযোগ তোলেন যে এই হত্যার পেছনে “র‍্যাডিক্যাল লেফট” জড়িত।

অন্যদিকে সমালোচকরা সতর্ক করছেন, এই হত্যাকাণ্ডকে অজুহাত করে বিরোধী দলকে দমন করার পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। সাম্প্রতিক এক জরিপে দুই-তৃতীয়াংশ আমেরিকান জানিয়েছেন, রাজনীতিতে প্রচলিত উসকানিমূলক ভাষা সহিংসতা বাড়াচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts