বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় আঞ্চলিক অফিস থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে পাঠানো হয়েছে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে।
WHO-এর মহাপরিচালক ডা. টেড্রোস আদহানোম গেব্রিয়েসুস এক সংক্ষিপ্ত অভ্যন্তরীণ ইমেইলে কর্মীদের জানান, ওয়াজেদ শুক্রবার থেকে ছুটিতে যাচ্ছেন এবং তাঁর অনুপস্থিতিতে WHO-এর সহকারী মহাপরিচালক ডা. ক্যাথারিনা বোহম “ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন”। টেড্রোস জানান, বোহম আগামী মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, নয়াদিল্লিতে SEARO অফিসে যোগ দেবেন।
ওয়াজেদ ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণ করেন, কিন্তু তাঁর নির্বাচনী প্রচারণা শুরু থেকেই বিতর্কিত ছিল — দাবি ওঠে যে, তাঁর প্রভাবশালী মা শেখ হাসিনা কন্যার নির্বাচন নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক প্রভাব খাটান।
এই অভিযোগের তদন্ত দুদক জানুয়ারিতে শুরু করে — যা পূর্বে Health Policy Watch-এও প্রতিবেদন আকারে প্রকাশিত হয়।
দুদকের আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র অনুযায়ী, ওয়াজেদ তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন, যা বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪৬৮ ধারায় (প্রতারণার উদ্দেশ্যে জালিয়াতি) ও ৪৭১ ধারায় (জাল দলিল ব্যবহার) দণ্ডনীয় অপরাধ।
দুদক আরও অভিযোগ করেছে, ওয়াজেদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) তাঁর একটি সম্মানসূচক পদ থাকার কথা দাবি করেন, যা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করেছে। তিনি এই ভুয়া দাবি WHO-এর পদ পাওয়ার জন্য ব্যবহার করেছেন।
এই অভিযোগগুলোর তদন্ত করেন দুদকের উপ-পরিচালক আখতারুল ইসলাম।
ওয়াজেদ-এর বিরুদ্ধে আরেকটি গুরুতর অভিযোগ হলো, তিনি তাঁর পূর্ববর্তী নেতৃত্বাধীন সুচনা ফাউন্ডেশন-এর জন্য বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ২.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩০ কোটি টাকা) সংগ্রহের জন্য ক্ষমতার অপব্যবহার করেন।
দুদক তার মামলায় এই অর্থ কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছে, সে বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যা দেয়নি। তবে এই অভিযোগের মধ্যে রয়েছে: প্রতারণা ও ক্ষমতার অপব্যবহার — যা দণ্ডবিধির ৪২০ ধারা (প্রতারণা ও প্রতারণার মাধ্যমে সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়া) এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারার আওতাভুক্ত।
এই অভিযোগ উত্থাপনের পর থেকে ওয়াজেদ SEARO অঞ্চলে কার্যকরভাবে ভ্রমণ করতে পারছেন না, কারণ তিনি বাংলাদেশে গ্রেপ্তারি ঝুঁকির মুখে রয়েছেন।